শনিবার, ০৫ অক্টোবর, ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১

এনটিআরসিএ‍‍`র শিক্ষক নিয়োগ: এতকিছুর পরও তথ্যে ভুল!

জীবন যাপন নভেম্বর ২৮, ২০২২, ১০:৫০ এএম
এনটিআরসিএ‍‍`র শিক্ষক নিয়োগ: এতকিছুর পরও তথ্যে ভুল!
এনটিআরসিএ

বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চতুর্থ ধাপে শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তুতি শুরু করেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। তবে শিক্ষার তিন অধিদপ্তর মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যাচাই করিয়ে আনানোর পরও শূন্যপদের তথ্যে ভুল দেখা যাচ্ছে। এতে নিয়োগ সুপারিশের পর শিক্ষকদের এমপিওভুক্তিতে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে শূন্যপদের তথ্য যাচাই শেষে ৭০ হাজার তথ্য এনটিআরসিএতে জমা পড়েছে। এগুলোর মধ্যে প্রায় ৩২ হাজার শূন্যপদ স্কুল-কলেজের। অবশিষ্টগুলো মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু অধিদপ্তরগুলো যেসব শূন্যপদ যাচাই করে ঠিক বলে জানিয়েছে সেগুলো ভুল দাবি করে অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে এনটিআরসিএতে আবেদন পাঠানো হচ্ছে। সেসব আবেদন আমলে নিয়ে ভুলগুলো বাতিল করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান মো. এনামুল কাদের খান বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান শূন্যপদের ভুল তথ্য পাঠিয়েছে বলে জানাচ্ছে তাদের পদগুলো বাতিল করা হচ্ছে। এতে শূন্যপদের মোট সংখ্যা কিছুটা কমতে পারে। তবে, ভুল দাবি করা শূন্যপদের তথ্য অপেক্ষাকৃত কম।  

এমন পরিস্থিতিতে অধিদপ্তরের যাচাই প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, অধিদপ্তরগুলো ও তাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যাচাই করা পরেও ভুল কাম্য নয়। আর এনটিআরসিএ কার্যালয় থেকেই যদি ভুল সংশোধন করতে হয় তাহলে অধিদপ্তরের মাধ্যমে যাচাইয়ের সার্থকতা কি থাকলো। 

জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে শূন্যপদের তথ্য অনলাইনে নেয়ার পর তা মাঠ পর্যায়ের জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যাচাই করা হয়েছে। সময়মতো যাচাই না হওয়ায় সময়ও কয়েক দফায় বাড়ানো হয়। এনটিআরসিএ অফিস থেকে বারবার ফোন করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। পরে সেগুলো অধিদপ্তরগুলোতে পাঠানো হয়। অধিদপ্তরগুলোও দফায় দফায় সময় নিয়ে তথ্য যাচাই করে দিয়েছে। 

এর আগে দ্বিতীয় চক্রে শিক্ষক নিয়োগেও শূন্যপদের তথ্যে ভুল ছিলো। সে সময় বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও তখন তা আমলে নেয়নি শিক্ষা প্রশাসন। কিন্তু নিয়োগের পরে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষক এমপিও জটিলতায় পড়েছিলেন। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির নির্দেশে সে জটিলতার সমাধান হয়। তারপর তৃতীয় চক্রে শিক্ষক নিয়োগের আগে শূন্যপদের তথ্য মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যাচাই শুরু হয়। সেবারও কয়েকশ শিক্ষক শূন্যপদের ভুল তথ্যের কারণে এমপিও জটিলতায় পড়েন। তাদের জটিলতা সমাধানের সিদ্ধান্ত এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে যোগদান করেও ওই শিক্ষকরা এখনো এমপিওভুক্ত হতে পারেননি। চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে এ ধরনের হয়রানি যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতেই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে শূন্যপদের তথ্য যাচাই করার সিদ্ধান্ত হয়েছিলো।

এক প্রশ্নে জবাবে এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, যাচাইয়ের পরেও ভুল থাকা শূন্যপদের কোনো শিক্ষক সুপারিশপ্রাপ্ত হলে দায় প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিতে হবে। 

প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় শিক্ষক নিয়োগ চক্রে শূন্যপদের ভুল তথ্য দেয়ায় প্রতিষ্ঠান প্রধানদের তিন মাসের এমপিও স্থগিত করে দিয়েছিলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সূত্র: দৈনিক শিক্ষা

আরও পড়ুন

Side banner