বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৫, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
বিয়ে মানবজীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র বন্ধন। দুজন মানুষের দাম্পত্য সম্পর্ককে বৈধ করার পাশাপাশি চারিত্রিক পবিত্রতা ও বংশধারা রক্ষায় বিয়ের ভূমিকা অপরিসীম। ইসলামে কখনো এটি ফরজ, আবার পরিস্থিতিভেদে সুন্নত হিসেবেও বিবেচিত হয়।
তবে অনেকেই বয়স বাড়ার পরও উপযুক্ত সঙ্গী খুঁজে পান না। নানা অনিশ্চয়তা, ক্যারিয়ারের চিন্তা কিংবা পারিবারিক জটিলতায় বিয়ের বয়স পেরিয়ে যায়। কেউ কেউ হতাশ হয়ে পড়েন। ধর্মীয় দিকনির্দেশনায় এমন পরিস্থিতিতে বিশেষ কিছু আমল পাঠ করলে আল্লাহর রহমতে সহজে সমাধান মিলতে পারে বলে মনে করা হয়।
সালাতুল হাজত ও বিশেষ দোয়া
দ্রুত বিয়ের জন্য আলেমরা সালাতুল হাজত নামাজ বেশি বেশি পড়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। নামাজের পর বিশেষ দোয়া পড়ার কথাও বলা হয়। কোরআনে বর্ণিত বিয়ের জন্য সুপরিচিত দোয়া হলো—
দোয়া:
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
উচ্চারণ:
রব্বানা হাব লানা মিন আজওয়াজিনা ওয়া জুররিয়্যাতিনা কুররাতা আ’ইউন, ওয়া জাআলনা লিল মুত্তাকিনা ইমামা।
অর্থ:
“হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদের এমন স্ত্রী ও সন্তান দান করুন যারা আমাদের চোখের শীতলতা হবে, এবং আমাদের তাকওয়াবানদের জন্য আদর্শ বানিয়ে দিন।” (সুরা ফুরকান, আয়াত ৭৪)
এই দোয়া প্রতিটি ফরজ নামাজের পর অথবা যেকোনো সময় পড়া যায়।
কোরআনের আরও কিছু আমল
বিয়েতে দেরি বা সিদ্ধান্তহীনতা দূর করতে কিছু আয়াত পাঠের বিষয়ে ধর্মীয় আলেমরা উৎসাহ দিয়ে থাকেন। নিয়মিত পাঠে আল্লাহর ইচ্ছায় মনোভাব, পরিস্থিতি ও সিদ্ধান্তে স্বচ্ছতা আসতে পারে বলে ধারণা করা হয়।
১. সুরা তাওবা, আয়াত ১২৯
فَإِن تَوَلَّوْاْ فَقُلْ حَسْبِيَ اللّهُ لا إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ
উচ্চারণ:
ফাইং তাওয়াল্লাও ফাকুল হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লাহুয়া আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রাব্বুল আরশিল আজিম।
অর্থ:
“তারা মুখ ফিরিয়ে নিলেও বলে দাও—আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট। তিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। তাঁর ওপরই আমি ভরসা করি; তিনিই মহান আরশের অধিপতি।” (সুরা তাওবা, ১২৯)
হাদিস ও আলিমদের ভাষ্যে জানা যায়, হজরত মুসা (আ.) একাকীত্ব ও মানসিক চাপে এ আয়াতটি বেশি পড়তেন।
২. সুরা কাসাস, আয়াত ২৪
فَقَالَ رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ
উচ্চারণ:
রাব্বি ইন্নি লিমা আংযালতা ইলাইয়্যা মিন খাইরিং ফাক্বির।
এই দোয়া হজরত মুসা (আ.)–এর সেই সময়ের, যখন তিনি জীবনের গভীর সংকটে ছিলেন। আল্লাহর অনুগ্রহ কামনায় এ আয়াত পাঠের কথাও বলা হয়ে থাকে।
অন্য আমল
১. প্রতিদিন ১১ বার সুরা দোহা পাঠ করা।
২. সুরা ইয়াসিন নিয়মিত পড়া।
৩. আল্লাহর ৯৯ নাম পাঠ করাও উপকারী বলে উল্লেখ আছে।
বিশ্বাসের জায়গা থেকে দু’আ ও আমল করা হলে আল্লাহ তায়ালা কল্যাণের দরজা খুলে দেন—এমনটাই প্রচলিত ধারণা। সৎ নিয়তে জীবনের অর্ধেক দ্বীন পূর্ণ করার জন্য (বিয়ে সম্পন্ন করতে) দোয়া করলে আল্লাহ তায়ালা বান্দার দোয়া কবুল করেন।