সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২
শীত পড়লেই অনেকের একটি সাধারণ কিন্তু বিরক্তিকর সমস্যা দেখা দেয়—ঠোঁট ফাটা। কখনো ঠোঁট শুকিয়ে টানটান লাগে, কখনো আবার চামড়া উঠে রক্তপাতও হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই সমস্যাকে বলা হয় কেইলাইটিস। যদিও এটি সাধারণত গুরুতর রোগ নয়, তবে অবহেলা করলে সংক্রমণ ও দীর্ঘস্থায়ী অস্বস্তির কারণ হতে পারে।
ঠোঁটের ত্বক শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় অনেক বেশি সংবেদনশীল। এতে স্বাভাবিক ত্বকের মতো তেলগ্রন্থি নেই, ফলে ঠান্ডা ও শুষ্ক আবহাওয়ায় ঠোঁট খুব দ্রুত আর্দ্রতা হারায়। তার সঙ্গে যোগ হয় পানিশূন্যতা, সূর্যের আলো কিংবা কিছু ভুল অভ্যাস—যা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তোলে।
ঠোঁট অতিরিক্ত শুকিয়ে যাওয়া
খসখসে ভাব বা চামড়া ওঠা
জ্বালা বা চুলকানি
খাবার খাওয়ার সময় ব্যথা
গুরুতর অবস্থায় ঠোঁট ফেটে রক্ত পড়া
শীতল ও শুষ্ক আবহাওয়া
দীর্ঘ সময় রোদে থাকা
বারবার ঠোঁট চাটার অভ্যাস
শরীরে পানির ঘাটতি
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স বা আয়রনের অভাব
কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
শিশু ও কিশোরদের অতিরিক্ত ঠোঁট চাটা
অ্যাক্টিনিক কেইলাইটিস: দীর্ঘদিন সূর্যের আলোয় থাকার ফলে
অ্যাঙ্গুলার কেইলাইটিস: ঠোঁটের কোণায় ছত্রাক বা জীবাণু সংক্রমণ
কন্টাক্ট কেইলাইটিস: প্রসাধনী বা লিপ প্রোডাক্টে অ্যালার্জি
ড্রাগ-ইনডিউসড কেইলাইটিস: নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের কারণে
ইনফেকটিভ কেইলাইটিস: ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসজনিত সমস্যা
দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন
নিয়মিত ময়েশ্চারাইজিং লিপ বাম ব্যবহার করুন
বাইরে বের হলে SPF যুক্ত লিপ বাম লাগান
ঠোঁট চাটা বা কামড়ানো এড়িয়ে চলুন
শুষ্ক ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন
রাতে ঘুমানোর আগে লিপ অয়েন্টমেন্ট লাগান
ভালো উপাদান:
পেট্রোলিয়াম জেলি, গ্লিসারিন, মিনারেল অয়েল, ক্যাস্টর অয়েল, সেরামাইড, ডাইমেথিকন, জিঙ্ক অক্সাইড, টাইটানিয়াম ডাইঅক্সাইড
এড়িয়ে চলুন:
অতিরিক্ত সুগন্ধি বা ফ্লেভার, মেন্থল, ক্যাম্ফর, ইউক্যালিপটাস, ল্যানোলিন ও অতিরিক্ত ওয়াক্সযুক্ত লিপস্টিক
দীর্ঘদিন ঠোঁট না ভালো হলে
তীব্র ব্যথা বা ঘন ঘন রক্তপাত হলে
ঠোঁটের চারপাশে ফুসকুড়ি বা সংক্রমণ দেখা দিলে
অন্য কোনো জটিল রোগের উপসর্গ মনে হলে
সঠিক যত্ন ও কিছু অভ্যাস বদলালেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শীতকালীন ঠোঁট ফাটার সমস্যা সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তবে সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।