শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১৬ কার্তিক ১৪৩২
 
              বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করেছে বলে মন্তব্য করেছে শিক্ষকদের আরেক সংগঠন স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাশিপ)।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. মো. শাহজাহান আলম সাজু বলেন, ‘স্বাশিপসহ শিক্ষক সমাজ যেখানে শিক্ষা ব্যবস্থার জাতীয়করণের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ, নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিনষ্টে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্র তৎপর ঠিক তখনই শুধু মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবে অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করে তারা। হঠাৎ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা দিয়ে, শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে, জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টিসহ একটি বিশেষ সময়ে এ কর্মসূচি নানা প্রশ্নের উদ্রেক ঘটায়।’
সোমবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে ‘সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ ঘোষণা ও শিক্ষকদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের’ দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
লিখিত বক্তব্যে শাহজাহান আলম সাজু বলেন, ‘বিটিএ’র কর্মসূচির পরিস্থিতিতে শিক্ষা মন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী, মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট অধিদফতরের কর্মকর্তারা সব শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে জরুরি সভা করেন। শিক্ষা মন্ত্রী জানান, জাতীয়করণের দাবিটি সবার। বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় আছে এবং এর সম্ভাব্যতা ও যৌক্তিকতা যাচাইয়ে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে দুটি কমিটি গঠন করা হবে। গত ২৮ মার্চ স্বাশিপ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অনুরূপ কমিটির দাবি জানানো হয়েছিল। শিক্ষকদের অন্যান্য যৌক্তিক দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সদয় এবং সেগুলো অতীতের মতো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে এবং এ প্রক্রিয়া চলমান আছে। এ জন্য আন্দোলন করার প্রয়োজন নেই। তিনি দেশের ভাবমূর্তি ও নিজেদের স্বার্থ বিবেচনা করে আন্দোলন স্থগিতের অনুরোধ জানালে আন্দোলনকারী নেতারাও অসম্মতি জানাননি।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু বিটিএ’র নেতারা আন্দোলনস্থলে গিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন সুরে কথা বলেন। স্বাশিপ ও স্বাশিপ নেতাদের সম্পর্কে উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যাচার করেন। চাকরির বিধি-বিধান লঙ্ঘন করে মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টদেরও কদর্যহীন ভাষায় গালমন্দ করেন তারা। এমনকি মন্ত্রীর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তার পদত্যাগ দাবি করা হয়। তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া প্রেসক্লাব ত্যাগ করবেন না বলে আমরণ অনশনের হুমকি দেন। সরকার বিরোধীদের ডেকে সভায় ভাষণ দেওয়ার সুযোগ দিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করেন।’
১ আগস্টে তারা কাফনের কাপড় পরেন জানিয়ে শাহজাহান আলম সাজু বলেন, ‘যে আগস্টে বাঙালির হৃদয়ে অবিরাম রক্তক্ষরণ ঘটে সেই আগস্টে কাফনের কাপড় পরে ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্ম দেন তারা। আবার আন্দোলন ব্যর্থ হচ্ছে বুঝতে পেরে সে দিনই শিক্ষক আন্দোলনের ইতিহাসে নজিরবিহীন বিচিত্র এক প্রক্রিয়ায় আন্দোলন নাটকের ইতি টানেন, যা শিক্ষক সমাজকে হতাশ ও হতভম্ব করে।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে চারটি দাবি জানায় স্বাশিপ। তাদের দাবিগুলো হলো– জাতীয়করণের সুষ্ঠু ও কার্যক্রর পরিকল্পনা, নীতিনির্ধারণ ও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সম্পাদনের জন্য গঠিত দুইটি কমিটির কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করা; ইনডেক্সধারী, এনটিআরসিএ নিবন্ধন করা শিক্ষকদের শূন্য পদে বদলি বাস্তবায়নের জন্য অবিলম্বে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা; বর্তমান বাজেট থেকেই পুর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দেওয়া, সুনির্দিষ্ট হারে বাড়ি ভাড়া ও মেডিক্যাল ভাতা বৃদ্ধি করা এবং প্রধান শিক্ষকদের স্কেল বৈষম্য দূর করা, সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন সমন্বয় সাধন, অনার্স-মাস্টার্স এবং স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি শিক্ষকদের এমপিও দেওয়া।
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন– স্বাশিপ সভাপতি প্রফেসর ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী, সহ-সভাপতি প্রফেসর মো. সাজিদুল ইসলাম, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান প্রমুখ।
 
         
         
         
         
         
         
         
         
         
         
         
         
         
         
         
         
        